বাকৃবির ভ্যাকসিন রিসার্চ সেন্টারে চুরির ঘটনায় একজনকে আটক

বাকৃবি প্রতিনিধি:

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) অবস্থিত লাইভস্টক অ্যান্ড পোলট্রি ভ্যাকসিন রিসার্চ এন্ড প্রোডাকশন সেন্টারে চুরির ঘটনায় একজনকে আটকের দাবি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মচারীরা।

মাইক্রোবায়োলজি এন্ড হাইজিন বিভাগের অধ্যাপক ড. কে. এইচ. এম. নাজমুল হুসাইন নাজির ও লাইভস্টক অ্যান্ড পোলট্রি ভ্যাকসিন রিসার্চ এন্ড প্রোডাকশন সেন্টারের কর্মচারীরা সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে ওই চোরকে আটক করেন বলে জানান।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃত চোর ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে। জানা যায়, চোর মো আজাদ মিয়া পেশায় একজন অটোরিকশাচালক ও সে কেওয়াটখালী মধ্য পাড়া বাসা ভাড়ায় থাকেন।

বুধবার (২৮ আগস্ট) সকাল ১১টায় আটকৃত চোরকে বিশ্ববিদ্যালয় নিরাপত্তা শাখায় পাঠানো হয়। এসময় জিজ্ঞাসাবাদে আরও তিনজনের নাম উঠে আসে। তার সহযোগী হিসাবে ছিল মো রিয়াদ, মো রমজান আলী ও মো. ফাহাদ।

অধ্যাপক ড. কে. এইচ. এম. নাজমুল হুসাইন নাজির বলেন, গত ২৫ আগস্ট রাত আড়াই টায় বাকৃবির ভ্যাকসিন সেন্টারে প্রবেশ করে একজন চোর। সেখানে কিছুদিন পূর্বেও নাইট গার্ড ছিলো কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে সেখানে নিরাপত্তার ঘাটতির জন্য চুরির ঘটনা ঘটেছে। প্রজেক্টের কর্মচারীরা আমাদের চুরি ঘটনাটি জানালে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে দেখতে পাই অভিযুক্ত চোর আজাদ সেখানে প্রবেশ করে।

সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে ঘটনা সম্পর্কে অধ্যাপক বলেন, আজাদ ওই রাতে ভ্যাকসিন সেন্টারের মেইন গেইটটি ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে। এরপর ভেতরের একটি কাঠের গেইটও ভেঙে ফেলে এবং একটি অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র নিয়ে যায়। সিসি ক্যামেরায় শনাক্ত ওই চোরকে ধরার জন্য আমাদের কিছু লোক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করে। চোর পেশায় একজন অটোরিকশাচালক হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে চলমান অটোগুলোকে অনুসরণ করার এক পর্যায়ে ওই চোরকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়।

“আমরা আরও জানতে পেরেছি আটককৃত চোরের সাথে আরো কয়েকজন রয়েছে। তারা নদের পাড়ে মাদকদ্রব্য সেবন করে। যখনই নেশার টাকার ঘাটতি পরে তখন তারা ছিচকে চুরি করে। ওই চোরকে আটক করে মাইক্রোবায়োলজি এন্ড হাইজিন বিভাগের নিয়ে আসার পর সে অকপটে সব স্বীকার করে।” অধ্যাপক নাজির বলেন।

তিনি আরও জানায়, ভ্যাকসিন প্রজেক্টে সাধারণত বড় যন্ত্রপাতি থাকে যেগুলো চুরি করা যায় না কিন্তু তারা যদি ভ্যাকসিন চুরি করে ফেলত তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হতো। এই ভ্যাক্সিনগুলো আমরা রিসার্চের কাজে ব্যবহার করি এবং দেশের বেশ কয়েক জায়গায় খুবই অল্প দামে সরবরাহ করে থাকি। ভ্যাকসিন যদি কালোবাজারে চলে যেতো সেক্ষেত্রে শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি কেবল ক্ষুন্নই হতো না বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যেতো। কেননা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরিকৃত ভ্যাকসিন যদি বাইরে বিক্রি হয় সেক্ষেত্রে সবাই মনে করবে ভ্যাকসিনগুলো চুরি করে বিক্রি হচ্ছে। বড় ধরনের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়। আমাদের চাওয়া ওই চোরের পুরো গ্যাং আটক করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে এবং একইসাথে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনের নজরদারি আরো বৃদ্ধি করতে হবে।

বাকৃবির নিরাপত্তা শাখার চীফ সিকিউরিটি অফিসার মো. নজমুল ইসলাম বলেন, চোরকে জিজ্ঞাসাবাদের পর সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ আমাদের নিরাপত্তা কর্মীরা তাকে ময়মনসিংহের কোতোয়ালী থানায় সোপর্দ করতে রওয়ানা হয়েছে।

Sponsor

Daily Darpan

Contact for Sponsor

You cannot copy content of this page