জাবি প্রতিনিধি:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষের (৫৩তম ব্যাচের) অরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামের মাধ্যমে রোববার (২০ অক্টোবর) ক্লাসের উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। এতে প্রায় দুই হাজার নতুন শিক্ষার্থী এসেছে ক্যাম্পাসে। একদিকে নানা আয়োজনে বর্নিল সাজে সেজেছে জাহাঙ্গীরনগর অন্যদিকে পূর্ণাঙ্গ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তরিত হওয়ার কারণে সন্তোষ প্রকাশ করেছে নবীন শিক্ষার্থীরা।
সরেজমিন কয়েকটি আবাসিক হল পরিদর্শন করে দেখা যায়, আবাসিক হলসমূহের নোটিশ বোর্ডের সামনে নবীন শিক্ষার্থীদের ভীড়। নোটিশ বোর্ড থেকে কক্ষ নম্বর দেখে নির্ধারিত সিটে উঠছেন তারা। কোনো কোনো হলের পক্ষ থেকে মিষ্টি ও ফুল দিয়ে বরণ করে নিচ্ছে শিক্ষার্থীদের। হলে শিক্ষার্থীদের কক্ষে গিয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকরা। এতে সন্তোষ প্রকাশ করেছে শিক্ষার্থীরা।
বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ ও তারামন বিবি হলের নবীন শিক্ষার্থী মোমতারিনা খুরশীদ বলেন, আমাদের একই ব্যাচের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধু-বান্ধবীরা যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে থাকার জন্য ক্যাম্পাসের বাইরে বাসা, ম্যাচ নিয়ে থাকতেছে সেখানে আমরা জাবিতে যারা ভর্তি হয়েছে তারা ক্লাস শুরুর আগেই বেড, টেবিল সহ রুম পাচ্ছি। এটা আমাদের জন্য অনেক সৌভাগ্যের এবং আমাদের বড় ভাই আপুদের যেখানে গণরুম এ থাকতে হয়েছিল, সেখানে আমরা গণরুম কালচার থেকে বাঁচতে পেরে আনন্দিত ।
শেখ রাসেল হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার কিছুদিন হলেও নবীন শিক্ষার্থীদের জন্য আমরা চেষ্টা করেছি একটা ভালো পরিবেশ উপহার দেওয়ার। আপাতত সেটা আমরা পেরেছি বলে মনে হয়।
সরেজমিন কয়েকটি হল পরিদর্শন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান ও প্রভোস্ট কমিটির সভাপতি অধ্যাপক নজরুল ইসলাম।
অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেন, আমি এখন পর্যন্ত ৫টি হল পরিদর্শন করেছি। এখন পর্যন্ত সার্বিক পরিবেশ সুন্দর মনে হয়েছে। এটা আমাদের জন্য নিঃসন্দেহে আনন্দের।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট কমিটির সভাপতি অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, সকাল থেকে পুরো ক্যাম্পাস পরিদর্শন করেছি। প্রত্যেক নবীন শিক্ষার্থীই তার নির্ধারিত সিট পেয়েছে। মাননীয় উপাচার্য মহোদয়ের দিকনির্দেশনা ও সকল প্রভোস্ট মহোদয়ের সার্বিক সহযোগতায় গণরুম জাদুঘরে পাঠাতে পেরেছি আমরা। এটা আমাদের সম্মিলিত সফলতা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের ফলে আমরা বিভিন্ন দায়িত্ব পেয়েছি। তাদের জন্য শিক্ষার সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ইতোমধ্যে গণরুম বিলুপ্ত করে র্যাগিং ও মাদক নির্মূলে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আশা করছি সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতায় এর ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে।
উল্লেখ্য, গত ২১ জুলাই ক্লাস শুরু হওয়ার কথা থাকলেও রাজনৈতিক নানান জটিলতার কারনে প্রায় তিন মাস পিছিয়ে আজ থেকে ক্লাস শুরু হচ্ছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে।