জাবি প্রতিনিধি:
চট্টগ্রামে হিন্দুদের ধর্মীয় নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর অনুসারী কর্তৃক সন্ত্রাসী হামলায় আইনজীবী নিহতের ঘটনায় প্রতিবাদ এবং ‘সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট’ (ইসকন) নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৮ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় জমায়েত হয়ে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে তাঁরা মিছিল নিয়ে রফিক-জব্বার হল প্রাঙ্গণ দিয়ে তাজউদ্দীন হল হয়ে পরিবহন চত্বর, বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরাঙ্গী মোড় ঘুরে মেয়েদের হল হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে মিছিলটি শেষ হয়। এসময় বিভিন্ন হল থেকে প্রায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেয়।
বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘হিন্দু মুসলিম ভাই ভাই, ইসকনের ঠাঁই নাই’, ‘ইসকনকে নিষিদ্ধ কর, করতে হবে করতে হবে’, ‘সাইফুল হত্যার বিচার চাই, করতে হবে’, বলে স্লোগান দেন।
এসময় ইসকনের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারীর অনুসারীদের সন্ত্রাসী হামলায় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ নিহতের ঘটনার দ্রুত বিচার নিশ্চিতের দাবি জানান তারা। একইসাথে অবিলম্বে বাংলাদেশে ইসকন নিষিদ্ধ করার দাবিও জানান শিক্ষার্থীরা।
গণঅভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, পতিত শক্তি বিভিন্ন গোষ্ঠীকে উসকে দিয়ে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। তারই ধারাবাহিকতায় আজকে চট্টগ্রামে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে আদালত প্রাঙ্গণে তাঁরা নির্মমভাবে হত্যা করেছে। এই সরকারকে অতিদ্রুত এই হত্যাকান্ডের বিচার করতে হবে। এসময় তিনি ছাত্রজনতাকে ঐক্যবদ্ধভাবে সকল ষড়যন্ত্রকে রুখে দেওয়ার আহবান জানান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষার্থী সোয়েব হাসান বলেন, বাংলাদেশ এই সরকারের মাধ্যমে একটা সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার জন্য এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু যারা বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অসাম্প্রদায়িক সহাবস্থান দেখতে চান না তাঁরা পতিত ফ্যাসিবাদী শক্তির সাহায্যে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। হিন্দু ভাইদের সাথে আমাদের কোনো বিরোধ নাই, কিন্তু ফ্যাসিবাদী শক্তির ষড়যন্ত্রে একটি উগ্রবাদী গোষ্ঠী এই সরকারকে ব্যর্থ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। আজকে তাঁরা আইনজীবী সাইফুল হত্যা করে তাদের উগ্রতার বহিষ্কার প্রকাশ ঘটিয়েছেন। এসময় তিনি সাধারন ছাত্রজনতাকে উস্কানীমূলক কর্মকান্ডে লিপ্ত না হয়ে সকল প্রতিরোধ করার অনুরোধ করেন।
এর আগে, আজ সকাল সাড়ে ১০টায় বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ষষ্ঠ আদালতের বিচারক কাজী শরিফুল ইসলামের আদালতে আনা হয়। রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় জামিন নামঞ্জুর করে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। পরে কারাগারে নিতে পুলিশের প্রিজন ভ্যানে তুললে আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ ভাঙচুর ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটায় চিন্ময় কৃষ্ণের অনুসারীরা। এ ঘটনায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ সহ আহত ৬-৭ জনকে চমেক হাসপাতালে আনা হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক সাইফুলকে মৃত ঘোষণা করেন।