র‍্যাগিংয়ের ঘটনায় বাকৃবির সোহরাওয়ার্দী হলে ৫৩ জন অভিযুক্ত শনাক্ত

বাকৃবি প্রতিনিধি:

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে নবীন শিক্ষার্থীদের উপর র‍্যাগিংয়ের ঘটনায় ৫৩ জন অভিযুক্তকে শনাক্ত করেছে হল প্রশাসন।

তাদের মধ্যে ২৮ জন শিক্ষার্থী সোহরাওয়ার্দী হলের বৈধ আবাসিক শিক্ষার্থী এবং বাকি ২৫ জন নন অ্যাটাচটভাবে হলে অবস্থান করছিলেন। বৈধ আবাসিক শিক্ষার্থীদের ১ বছরের জন্য হল থেকে বহিষ্কার এবং নন অ্যাটাচটদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্ব স্ব অ্যাটাচট হলে ফেরত পাঠানো হয়।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) ভোর ৪ টায় হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক মো. বজলুর রহমান মোল্যা হলের বৈধ শিক্ষার্থীদের বহিস্কার আদেশ দেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ডিনেন্স অনুযায়ী হলে শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজে সম্পৃক্ত থাকার কারণে তাদের বহিষ্কার করা হয় বলে জানান প্রভোস্ট অধ্যাপক মো. বজলুর রহমান মোল্যা।

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবদুল আলীম, বাকৃবির শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান সরকার, সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মুনির হোসেন, সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আনিছুর রহমান মজুমদার, সহযোগী ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ, অন্যান্য হলের প্রভোস্ট উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, বহিষ্কৃতদের মধ্যে ওই হলের লেভেল-১, সেমিস্টার-২, লেভেল-২, লেভেল-৩, লেভেল-৪ এবং মাস্টার্সের শিক্ষার্থী রয়েছে।

সোহরাওয়ার্দী হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক মো. বজলুর রহমান মোল্যা বলেন, অভিযুক্তরা গত রাতে নতুন ভর্তিকৃত ছাত্রদের র‍্যাগিং করেছে। গোপনে তারা এই কাজ করেছে। পরবর্তীতে তথ্যের ভিত্তিতে ও ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলে আমরা তাদের শনাক্ত করেছি। অভিযুক্তরা তাদের অপরাধ স্বীকার ও করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, হলসমূহের প্রভোস্ট, শিক্ষক এবং কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনার প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ডিন্যান্স এর ৭ নম্বর ধারা মোতাবেক হল থেকে তাদের ১ বছরের জন্য বহিস্কার করে দেয়া হয়েছে। সোহরাওয়ার্দী হলের ২৮ জন এবং নন অ্যাটাচ ২৫ জন অভিযুক্তকে শনাক্ত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সোহরাওয়ার্দী হলের অ্যাটাচ ২৮ জনের মধ্যে যাদের হলে পেয়েছি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি এবং নন অ্যাটাচদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বাকৃবির প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবদুল আলীম বলেন, র‍্যাগিংমুক্ত ক্যাম্পাস গড়তে বাকৃবি প্রশাসন সর্বদা বদ্ধপরিকর এবং আমরা সেভাবেই এগিয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু সোহরাওয়ার্দী হলের শিক্ষার্থীরা সর্বপ্রথম গত ১২ জানুয়ারি রাতে নবীন শিক্ষার্থীদের উপর র‍্যাগিং করে এবং এর ফলে এক শিক্ষার্থী অজ্ঞান হয়ে পড়ে। হল প্রভোস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ডিন্যান্স মোতাবেক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে এবং পরবর্তীতে তদন্তের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আরো ব্যবস্থা নিবে।

বাকৃবির সহযোগী ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ বলেন, র‍্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের জিরো টলারেন্স। সোহরাওয়ার্দী হলে যে অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছে তার প্রেক্ষিতে আমরা ৫৩ জনকে শনাক্ত করেছি। তাদের মধ্য থেকে যাদের হলে পেয়েছি প্রভোস্টের ক্ষমতাবলে ১ বছরের জন্য হল থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। বোর্ড অফ রেসিডেন্স কমিটির নিকট প্রভোস্ট মহোদয় তাদের বিরুদ্ধে চিঠি প্রদান করবে এবং পরবর্তীতে প্রশাসন তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

জানা যায়, গত ১২ জানুয়ারি তারিখে বাকৃবির হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে র‍্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটে, ফলে নবীন এক শিক্ষার্থী অজ্ঞান হয়ে যায়। এসময় হলে বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীরা নবীন শিক্ষার্থীদের উপর র‍্যাগিং করে।

Sponsor

Daily Darpan

Contact for Sponsor

You cannot copy content of this page