কুবি প্রতিনিধি:
জুলাই বিপ্লবের প্রথম রক্তাক্ত স্থান কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) এর ছাত্র আন্দোলন চত্বরের নাম ভুলে যেতে শুরু করেছে সকলে। একই সাথে ইতিহাস থেকেও বিলীন হয়ে যাচ্ছে জুলাইয়ের স্মৃতিবিজড়িত এই ছাত্র স্থানটি। জুলাই বিপ্লবের পাঁচ মাস পরও এখানে কোন স্মৃতিস্তম্ভ নেই। এমনকি নেই কোন নামফলক।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ‘আনসার ক্যাম্প’ মোড়ে ১১ জুলাই, ২০২৪ এ কোটা বৈষম্যের প্রতিবাদে বের হওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে পুলিশ হামলা করে। সেখানে পুলিশ গুলি, টিয়ার গ্যাস, ও লাঠিচার্জ করে কুবি শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের রক্তাক্ত করে। তার প্রেক্ষিতে ‘আনসার ক্যাম্প মোড়’ এর নামকরণ করা হয় ‘ছাত্র আন্দোলন চত্বর’ নামে। জুলাই মাসেই এখানে ‘ছাত্র আন্দোলন চত্বর’ লিখা একটি কাগজের নামফলক যুক্ত করা হয়। পরবর্তীতে এই কাগজের নামফলকটিকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট লোকজন কতৃক সরিয়ে ফেলার অভিযোগ রয়েছে।
জুলাই বিপ্লবের প্রায় পাঁচ মাস পর এসেও এই চত্বরে নেই উল্লেখযোগ্য কোন স্মৃতিচিহ্ন। আশেপাশের দেয়ালগুলোতেও নেই গ্রাফিতির ছাপ। প্রথম আঘাত করা স্থানে নেই কোন স্মৃতিস্তম্ভ। সেইসাথে অনেকের মুখেই এটিকে পূর্বের ন্যায় ‘আনসার ক্যাম্প’ বলে অভিহিত করতে শোনা যায়। এটি এক প্রকার ইতিহাস থেকে এই স্থানের নামটিকে মুছে দেয়ারই নামান্তর।
এ নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, মোজাম্মেল হোসেন আবির বলেন‚ কোন ঘটনাকেই ইতিহাস থেকে মুছে দেয়া যায় না। জুলাই আন্দোলন চলাকালে পুলিশের গুলিতে সর্বপ্রথম রক্তাক্ত হয় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। এ পুলিশি হামলাটি হয় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বর্তমান ছাত্র আন্দোলন চত্বরে। যেহেতু এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকানাধীন জায়গা নয় তাই আমরা এটিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য কিছুদিন আগে বন বিভাগ বরাবর আবেদন করেছি। তবে এখনো তাদের থেকে জবাব মেলেনি। আমরা এখানে একটি স্মৃতিস্তম্ভ করতে চাই। সেইসাথে দু-পাশের দেয়ালগুলোতে জুলাইয়ের ইতিহাস সংবলিত গ্রাফিতি আঁকতে চাই। এ বিষয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের সাথে কথা বলছি। দেরি হয়ে গেলেও অনুমতি পাওয়ার পর আমরা যত দ্রুত সম্ভব ‘ছাত্র আন্দোলন চত্বরকে’ ইতিহাসের পাতায় স্মরণীয় করে রাখতে কার্যক্রম শুরু করবো।