স্বৈরাচারমুক্ত প্রথম ঈদ, কুবি শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

তানভীর মাহিম, কুবি প্রতিনিধি:

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে স্বৈরাচার মুক্তির পর প্রথম ঈদ উদযাপন করছে বাংলাদেশ। তাই এবারের ঈদ বিশেষ অর্থবহ হয়ে উঠেছে দেশবাসীর কাছে। বিশেষ করে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে। দীর্ঘদিনের আওয়ামী ফ্যাসিবাদের শৃঙ্খল ভেঙে শিক্ষার্থীরা পেয়েছে এক নবজীবনের আশা, এক নতুন স্বপ্নের দিগন্ত। শুধু ধর্মীয় উৎসব নয়, এক‌টি বিজ‌য়ের প্রতীক এবা‌রের ঈদ। এমনটাই মন্তব‌্য কু‌মিল্লা বিশ্ব‌বিদ‌্যাল‌য়ের শিক্ষার্থী‌দের। এদিকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীদের আকাঙ্খা ও প্রত্যাশা তুলে ধরা হলো।

অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী সাইমা আক্তার বলেন‚ ‘ঈদ মানেই আনন্দ।এবারের ঈদটা সত্যি অন্যরকম। এবার ঈদ এসেছে অনেক পরিবর্তনের পর। স্মরণ করছি শহীদদের যাদের আত্মত্যাগে নতুন এই বাংলাদেশ, অন্যরকম এই ঈদ। আমরা এতোদিন যে পরিবর্তনের জন্য আন্দোলন করেছি, এখন সেই পরিবর্তনের সুফল দেখতে চাই। সাধারণ মানুষের জীবন যেন সহজ হয়, ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয়, এটাই আমাদের চাওয়া। ঈদ মানে তো একসাথে আনন্দ করা, তাই চাই দেশের সকল মানুষ এক হয়ে আনন্দ উদযাপন করি।দেশ সত্যিকারের উন্নতির পথে এগিয়ে যাক, এই ঈদে এটিই প্রত্যাশা।’

গণ যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী সাঈদ আহমেদ রিফাত বলেন‚ ‘গণ-অভ্যুত্থানে যাদের অবদান ছিলো তাদের সবার জন্য স্বাধীন দেশে প্রথম ঈদটা অন্যরকম আনন্দদায়ক ব্যাপার হবে। আর এই আনন্দদায়ক ব্যাপারটা ঘটানোর পিছনে সবচেয়ে বড় ত্যাগ স্বীকার করেছেন আহত ও শহীদ ভাইবোনেরা। তাই তাদের যেন আমরা না ভুলে যাই। আনন্দ ও উৎসবে তারাও যাতে আমাদের সঙ্গী হোন সেই প্রত্যাশা থাকবে। গণ-অভ্যুত্থান পর আমাদের সবারই চাওয়া হচ্ছে দেশটা সুন্দর, সুশৃঙ্খল ও শান্ত থাকুক। দুর্নীতি, অনিয়ম, ফ্যাসিবাদ মুক্ত দেশ হোক। সবাই সহজ জীবনযাপন করুক। মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকুক। সকল বৈষম্য দূর হোক। গণঅভ্যুত্থানের পর আমরা স্বাধীন দেশে প্রথম ঈদ পেতে যাচ্ছি। বরাবরই এই ঈদ নিয়ে খুব আনন্দিত ও প্রত্যাশিত যে এই ঈদটা এবার অনেক মানুষের জন্য স্বস্তিদায়ক হবে। ফ্যাসিবাদি সরকার থাকাকালীন অনেক পরিবারের জন্য ঈদ ছিলো যন্ত্রণাদায়ক। এবার আশা করি সেই আফসোসটা অনেকটা মিটবে। সুন্দর ও আনন্দঘন পরিবেশে পরিবারের সাথে সবার ঈদটা সহজ সুন্দর হবে।’

ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ রাহিম বলেন‚ ‘বিগত ১৫ বছরের স্বৈরাচারের করা রাজনৈতিক অচলাবস্থা থেকে মুক্তির পর জনগণ একটি স্বাভাবিক ও উৎসবমুখর পরিবেশে ঈদ উদযাপন করতে চাইবে, যেখানে থাকবে শান্তি, আনন্দ, ঐক্য এবং ভবিষ্যতের জন্য নতুন আশা এমনটাই কাম্য, এবং বর্তমান ইউনুস সরকার নিজের জায়গা থেকে জনগণের আকাঙ্খা পূরণের সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে এবং সেক্ষেত্রে অনেকটাই সফল। কিন্তু বর্তমান সরকারের সার্বিক সংস্কার এবং বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরার গতিশীল কার্যক্রমের ধারাবাহিকতাকে বাধাগ্রস্ত করছে বলে মনে হয় প্রতিনিয়ত নির্দিষ্ট কিছু রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনের জন্য দেওয়া চাপ। এই মূহুর্তে ইউনূস সরকারকে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের উচিত একটি যৌক্তিক সময় দেওয়া এবং দেশ গঠনের সার্বিক কাজকে আপাতত নির্বাচনের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া।’

আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইজা তাসনিম বলেন‚ ‘জুলাই বিপ্লব মূলত তারুণ্যের তাজা প্রাণের বিনিময়ে বাংলাদেশের অর্ধনমিত সূর্যকে টেনে মাঝ আকাশে তোলার শেষ প্রচেষ্টা। বিপ্লবের প্রায় নয় মাস পেরিয়ে গেলেও দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এখনো আসেনি। তবে সেই সুযোগে কোনো অপশক্তি যেন মাঝ আকাশের সূর্যকে আবার নামিয়ে না ফেলতে পারে, সেই প্রত্যাশাই করছি। স্বাধীন দেশে ঈদের খুশি আসুক সব বৈষম্য ভুলে। এ দেশের বুকে আঠারো আসুক নেমে।’

পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চ, কুবি শাখার যুগ্ম আহবায়ক ফারুক আল নাহিয়ান বলেন‚ ‘ঈদের সাথে রোজা কিংবা সিয়াম সাধনা অঙ্গাঅঙ্গিকভাবে জড়িত। প্রচলিত আছে যে- তীব্র আকাঙ্খা,প্রতিক্ষার পর যা পাওয়া যায় তাতেই সুখ নিহিত তেমনি দীর্ঘ এক মাস জুড়ে সংযম, সঠিক সময়ে সেহেরী,ইফতার কিংবা তারাবীর মাধ্যমে সময়ানুবর্তিতা সহ হরেক রকম নৈতিক,মানবিক শিক্ষার অনুশীলন শেষে উপহারস্বরুপ আমাদের মাঝে আসে ঈদ আমরা আনন্দে উদ্বেলিত হই। ঈদ মানে সকল ধরনের আনন্দের এক বিশাল প্যাকেজ। বিগত ১৭ বছর যেনো আমরা সিয়াম সাধনা করেছি,ধৈর্য ধরেছি সবশেষে জাতিগতভাবে আগস্টের ৫ তারিখ জীবনপ্রাক্কালে ঈদস্বরুপ উপভোগ করেছি। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী প্রথম ঈদে আমার আকাঙ্খা থাকবে দ্রব্যমূল্যের লাগাম টেনে ধরা হলেও সরকারের আরো কমানোর চেষ্টা করা যাতে গরীব দুখিরা ঈদের দিন অন্তত সেমাই-গোস্ত খেতে পারে পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য ব্যবস্তা গ্রহণ করা।’

আইসিটি বিভাগের শিক্ষার্থী ও বুদ্ধিবৃত্তিক সংগঠন ‘পাটাতন’ এর সাধারণ সম্পাদক সায়েম মোহাইমিন বলেন‚ ‘ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশে আমাদের তরুণ প্রজন্মের এটাই প্রথম ঈদ। ফ্যাসিবাদের চরিত্র ছিল রক্ষক হয়ে ভক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া। অন্যদিকে ঈদ উল ফিতর হচ্ছে ফিতরা বা সদকার মহোৎসব। ফ্যাসিবাদোত্তর এই ঈদ উল ফিতর হোক সদকা করার, ২০০০+ শহীদের কবর জিয়ারত করার এবং গাজীদের পাশে দাঁড়ানোর ঈদ। বিগত দেড় দশকে অসংখ্য মানুষ জুলুমের শিকার হয়েছেন। বিশেষত বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙ্গিনায় ফ্যাসিবাদের দোসরদের হাতে অনেকেই নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এই ঈদে আমাদের প্রত্যাশা থাকবে রাষ্ট্র, রাজনৈতিক দল, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং সমাজের প্রভাবশালী অংশ জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকল মজলুমের পাশে দাঁড়াবে। ঈদ উল ফিতর আমাদেরকে সেই সুযোগ করে দিয়েছে। আশা করি পবিত্র মহরমে জুলুমশাহীর বিরুদ্ধে আমাদের যে জাতীয় ঐকতানে তৈরী হয়েছিল এবারের ঈদে সেই ভাতৃত্ব, জাতীয় ঐক্য আরো সুদৃঢ় হবে। সবাইকে ঈদের অগ্রীম শুভেচ্ছা, ঈদ মোবারক।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এর সমন্বয়ক ও ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মোজাম্মেল হোসেন আবির বলেন‚ ‘গণ অভ্যুত্থান পর স্বাধীন দেশের প্রথম ঈদ নিঃসন্দেহে অন্যরকম এক পূর্ণতার। বিগত বছর গুলোতে কেবল মাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে হাজার হাজার বিরোধী দলের নেতা কর্মী, ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীরা তাদের পরিবারের সাথে ঈদ উদযাপন করতে পারেনি, এ বছর তারা নির্ভয়ে পরিবারের সাথে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করবে। এটাই এই ঈদের বড় আনন্দ। ঈদের আনন্দের সাথে আমাদের আকাঙ্ক্ষা ও প্রত্যাশা ও অনেক বেশি। আমি প্রত্যাশা করি সাম্প্রদায়িকতার যে মিথ্যা বয়ান আওয়ামী সন্ত্রাসীরা প্রতিষ্ঠা করে গিয়েছে সেটা ভেঙ্গে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়তে সবাই এগিয়ে আসবে। জুলাই আন্দোলনের অংশীজন রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের স্বার্থে কাঁদা ছোড়াছুড়ি না করে, এমন একটি সুশৃঙ্খল রাষ্ট্র গঠনে এগিয়ে আসবে, যে রাষ্ট্রে নাগরিক অধিকার পাওয়ার জন্য রাজনৈতিক পরিচয়ের দরকার হবে না। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট বাণিজ্য ত্যাগ করে দ্রব্যমূল্য সহনশীল রাখতে এগিয়ে আসবে, শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিষ্ঠানে সুস্থ পরিবেশ ফিরে পাবে, শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাসের কোন রাজনীতি থাকবে না, বরং ভালো কাজ ও দক্ষতা অর্জন মুলক কার্যক্রমে ছাত্র সংগঠন গুলো এগিয়ে আসবে, ছাত্ররাজনীতির নামে অস্ত্রের মহড়া চলবে না ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে। বরং ক্যাম্পাস গুলো হবে জ্ঞান চর্চার কেন্দ্র। এ ছাড়াও জুলাই আন্দোলনের গণহত্যার দোষীদের বিচার নিশ্চিত করা সবার আকাঙ্ক্ষা, সে বিচার নিশ্চিত হলে শহীদ পরিবারের সদস্যরা ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারবেন।’

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান শুভ বলেন‚ ‘স্বৈরাচার মুক্ত বাংলাদেশে ঈদ উদযাপন এক অন্য রকম আনন্দ সমস্ত বাংলাদেশীদের জন্য। এমন নিরাপদ ও স্বস্তিদায়ক ঈদ উদযাপন করার পরিবেশ সৃষ্টিতে প্রথমে শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহর প্রতি। শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি ‘জুলাই-আগস্ট আন্দোলন’ এর সকল শহীদ সহ আওয়ামী আমলে নিহত সকল বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, সেচ্ছাসেবকদল সহ অন্যান্যদের, কৃতজ্ঞচিত্ত্বে স্মরণ করছি এই আন্দোলনে পঙ্গুত্ব বরণকারীদের এবং বিগত ১৬ টি বছরে আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের দ্বারা খুন ও গুমের শিকার ব্যক্তিদের। আওয়ামী ফ্যাসিজমের শুরু ২০০৮ সালে। আওয়ামী সরকার কারচুপির নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসার পর স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করা জন্য ২০০৯ সালে পিলখানা হত্যা, তারপর শাপলা চত্বরে আলেম উলামাদের গণহত্যা, সর্বশেষ ২০২৪ সালের ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনে’ হাজারের অধিক হত্যা সহ গত ১৬ বছরে বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর চালিয়েছে অমানবিক নির্যাতন। বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা গত ১৬ বছরে প্রায় সকল নেতাকর্মীর ঈদ কেটেছে শঙ্কায়,আতঙ্কে,ভয়ে। প্রায় প্রতিটি নেতাকর্মী বাড়ির বাহিরে, পরিবারহীন ঈদ কেটেছে তাদের,লাখো নেতাকর্মীদের ঈদ কেটেছে কারাগারের চার দেয়ালে বন্দি হয়ে,অগণিত (কয়েক লাখ) নেতাকর্মী আপন জন্মভূমি ছেড়ে বিদেশ পাড়ি দিতে হয়েছে অনিচ্ছায়। এই ঈদ আমাদের জন্য স্পেশাল অবশ্যই কারন,স্বৈরাচারীনীর বিগত ১৬ বছরে আমার মতো কোটি যুবক ঈদ উদযাপন করেছে কষ্টে, কারাগারে, ঘরহীনে, অনিশ্চিত গন্তব্যে,কিন্তু এবার বাংলাদেশের মানুষ শান্তিতে পরিবারের সাথে ঈদ উদযাপন করবে, শান্তিতে-শস্তিতে ঈদ পালন করবে শেখ হাসিনা বিহীন এই বাংলাদেশে। পরিশেষে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারি সহ সকলকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের পক্ষ থেকে প্রবিত্র ঈদ-উল ফিতরের শুভেচ্ছা জানাই।’

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সভাপতি হাফেজ ইউসুফ ইসলাহী বলেন‚ ‘এবারের ঈদটা আমাদের সকলের নিকট অন্যরকম এক ঈদ। ফ্যাসিবাদী অপশক্তি থেকে মুক্ত হয়ে আমরা অন্যরকম এক ঈদ উদযাপন করবো, ইনশাআল্লাহ। এই সুন্দর ঈদ উদযাপনে মহান মুনিবের নিকট প্রার্থণা থাকবে- প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশে যেন আর কোনো দিন ফ্যাসিবাদ ফিরে না আসে। এই আনন্দের দিনে আমরা ভুলতে পারি না আমাদের সেই বীর শহীদদের, যারা দেশের জন্য, দশের জন্য, ইসলামী আন্দোলনের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। আমরা গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি জুলাই বিপ্লব এর শহীদ আবদুল কাইউমসহ সারাদেশে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে প্রায় দুই সহস্রাধিক শহীদদের, আরও স্মরণ করছি বিগত সময়ে ছাত্রশিবিরের সকল শহীদদের, যারা আল্লাহর জমিনে আল্লাহর বিধান প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিলেন এবং সে লক্ষ্যেই জীবন উৎসর্গ করেছেন। তাদের রক্তের ঋণ কোনোদিন শোধ হবার নয়। আজ ঈদের আনন্দের দিনে আমরা যেন আমাদের করণীয় ভুলে না যাই। ইসলামী আন্দোলনের এই পথ কখনো সহজ ছিল না, এখনও নেই। আমাদেরকে ধৈর্য, আত্মত্যাগ ও একাগ্রতার সঙ্গে সামনের পথ চলতে হবে। শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষা ও গবেষণার পরিবেশ নিশ্চিত করতে পরস্পরকে সহযোগিতা করতে হবে, সেই সঙ্গে রমজানের শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে আমরা যেন আত্মশুদ্ধি অর্জন করি এবং সমাজে ন্যায়, সত্য ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠার জন্য নিজেদের প্রস্তুত করি। আসুন, আমরা প্রতিজ্ঞা করি— শহীদদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিজেদের উৎসর্গ করব, ইসলামের পতাকাকে সমুন্নত রাখব এবং অন্যায়, জুলুম ও ফিতনার বিরুদ্ধে সর্বদা সোচ্চার থাকব। ঈদ হলো একে অপরের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয়ার দিন। আসুন আমরা দূরত্ব ও ভেদাভেদ ভুলে হাতে হাত রেখে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করে যাই। পরিশেষে, এই পবিত্র দিনে আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করি, তিনি যেন আমাদের ঈদকে গ্রহণযোগ্য করেন, শহীদদের শাহাদাতকে কবুল করেন এবং আমাদেরকে হক ও ইনসাফের পথে অবিচল রাখেন। সবাইকে ঈদ মোবারক।’

Sponsor

Daily Darpan

Contact for Sponsor

You cannot copy content of this page