জাবি প্রতিনিধি:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ছাত্রদের আবাসিক হল ‘জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল’-এর একটি কক্ষে এক নারী শিক্ষার্থীর অনুপ্রবেশের অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক নীতিমালা অনুযায়ী এটি স্পষ্টত নিয়মভঙ্গের শামিল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া এক ছবিতে দেখা যায়, বাংলা বিভাগের এক ছাত্রী একদল ছাত্রের সঙ্গে নির্জন কক্ষে অবস্থান করছেন।
ছবিতে যাকে দেখা গেছে তার নাম ইশরাত জাহান। তিনি বাংলা বিভাগের ৫২তম ব্যাচের (২০২২-২৩ সেশন) শিক্ষার্থী।
সূত্রমতে, ছবিটি ওই হলের পঞ্চম তলার ৫২৭ নম্বর কক্ষে তোলা হয়েছে। জানা যায়, ইশরাত তার বন্ধু এফ এম প্রত্যয়ের নতুন রুম দেখতে গিয়েছিলেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন আরও কয়েকজন সহপাঠী—আমিনুল ইসলাম, সামিদুল ইসলাম ও মো. রাশেদ, যারা একই ব্যাচের শিক্ষার্থী।
বিশেষ সূত্র থেকে জানা যায়, রুমে ছবি তোলার পর তা বিভাগের গ্রুপে শেয়ার করা হয়। পরে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জেরে ছবিটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ ছাড়া ছাত্রীটির সঙ্গে কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতার ঘনিষ্ঠতা নিয়েও গুঞ্জন রয়েছে।
ঘটনা প্রসঙ্গে ছাত্র আমিনুল ইসলাম বলেন, “ছবিটি অক্টোবর মাসে তোলা, যখন আমরা নতুন রুমে উঠেছিলাম। তখন হলে পুরোপুরি কার্যক্রম শুরু হয়নি।” একই ধরনের মন্তব্য করেন সামিদুল ইসলামও। তিনি বলেন, “হল উদ্বোধনের দিন এই ঘটনা ঘটে। তখন অনেক কিছুই ঠিকঠাক ছিল না। আমরা ভেবেছিলাম প্রশাসন হয়তো সাময়িক অনুমতি দিয়েছে।”
অভিযুক্ত ছাত্রী ইশরাত জাহান বলেন, “তখন অনেক মেয়েই হলে গিয়ে ছবি তুলেছিল। আমিও ছাদে যাওয়ার কথা ভাবছিলাম, কিন্তু সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় বন্ধুর রুমেই কয়েকটি ছবি তুলি। এখন সেই ছবিগুলো বিকৃতভাবে ভাইরাল করা হয়েছে, যা আমার জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক।”
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী শৃঙ্খলা সংক্রান্ত অধ্যাদেশ ২০১৮ অনুসারে, ছাত্রদের হলে লিখিত অনুমতি ছাড়া কোনো ছাত্রী প্রবেশ করতে পারবে না। একই অধ্যাদেশ অনুযায়ী, প্রভোস্ট সর্বোচ্চ ছয় মাসের বহিষ্কার বা ২০০০ টাকা জরিমানা দিতে পারেন। গুরুতর হলে উপাচার্যের কাছেও বিষয়টি পাঠানো যেতে পারে।
এক আবাসিক শিক্ষার্থী বলেন, “হল শুধু থাকার জায়গা নয়, এটা নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার বিষয়ও। কোনো ছাত্রী এভাবে প্রবেশ করায় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়েছে।”
হলের প্রভোস্ট জানান, বিষয়টি তদন্তাধীন এবং তদন্ত প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. রাশেদুল ইসলাম বলেন, “যেকোনো নীতিমালা লঙ্ঘনের ঘটনা গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। তদন্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”