চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবানের স্বাদ ঘরের রান্নায়

চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবানের স্বাদ ঘরের রান্নায়

ডেইলিদর্পণ প্রতিবেদক:

চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবানের খ্যাতি দেশব্যাপী রয়েছে। ঐতিহ্যবাহী মেজবান সম্পর্কে জানা যায়, ১৮ দশকের দিকে চট্টগ্রামে মেজবানের প্রচলন শুরু হয়। অতীতে চট্টগ্রামের ধনী লোকেরা বিভিন্ন উত্সব উপলক্ষ্যে গরিব লোকদের উন্নতমানের খাবারের আয়োজন করতেন। সেই থেকে মেজবানের প্রচলন চলে আসছে। মেজবান শব্দটি একটি ফারসি শব্দ। এই মেজবানকে মেজ্জানি বলা হয়ে থাকে। চট্টগ্রামের বাইরে অন্যান্য জেলায় এই মেজবানকে জেয়াফত বলা হয়। মেজবান সাধারণত কারো মৃত্যুবার্ষিকী, কুলখানি, চল্লিশা, ওরশ শরিফ, মিলাদ মাহফিল, নতুন বাচ্চার আকিকা, গায়ে হলুদ, নতুন ঘরে ওঠা অথবা নতুন ব্যবসায়-বাণিজ্য শুরু করার আগে মেজবানের আয়োজন করা হয়।

চট্টগ্রামের ঐতিহ্য মেজবান শুধু উৎসবের খাবার, এখন ঘরে ঘরে রান্না হচ্ছে সহজভাবে। আধুনিক রান্নার সরঞ্জাম আর বাজারে পাওয়া রেডিমেড মসলা প্যাকেট বদলে দিয়েছে এই জটিল রান্নার সংজ্ঞা।

মেজবান রান্নার সরঞ্জাম ও উপকরণ:

– গরুর হাড্ডিসহ মাংস (তেলবহুল অংশ ভালো)
– শুকনা মরিচ, পেঁয়াজ, রসুন
– মেজবানি মসলা (বাজারে ‘চট্টলা মেজবানি মসলা’সহ নানা ব্র্যান্ড পাওয়া যায়)
– সরিষার তেল ও সামান্য ঘি

মেজবানের সহজ রেসিপি:

১. পেঁয়াজ ও রসুন বাটা দিয়ে কড়াইয়ে তেল গরম করে নিন।
২. এরপর শুকনা মরিচ গুঁড়ো ও মেজবানি মসলা দিয়ে হালকা আঁচে ভালোভাবে কষান।
৩. মাংস দিয়ে দিন, চুলায় সময় নিয়ে নেড়ে নেড়ে কষান যতক্ষণ না তেল ছেড়ে দেয়।
4. পানি দিয়ে ঢেকে দিন, রান্না করুন কম আঁচে। ১.৫–২ ঘণ্টা সময় দিন যাতে মাংস নরম ও ঝরঝরে হয়।

বিশেষজ্ঞ রন্ধনশিল্পীরা বলছেন, “মেজবান আসলে শুধু রেসিপি না— এটা একটি ধৈর্য আর সময়ের শিল্প। তবে এখন ঘরেই সেই শিল্প চর্চা করা সম্ভব।”

ঘরের ছোট আয়োজনেও এখন মেজবানি গন্ধে মুখরিত হচ্ছে দুপুরের টেবিল। অতিথি আপ্যায়ন হোক কিংবা নিজের জন্য, ঐতিহ্যের স্বাদ পেতে আর দরকার নেই বিশাল আয়োজনের।

কেউ চাইলে ঘরেও শুকনা মরিচ, লবঙ্গ, দারুচিনি, এলাচ, জিরা, ধনিয়া ভেজে বেটে তৈরি করতে পারেন নিজের মেজবানি মসলা।

Sponsor

Daily Darpan

Contact for Sponsor

You cannot copy content of this page