,

পাঠ্যপুস্তক সংশোধনে আলেমদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে: বিএসপি চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক:

মাজারে হামলা, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শাস্তি ও পাঠ্যপুস্তক সংশোধনে আলেমদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) চেয়ারম্যান সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভান্ডারী।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে জাতীয় পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জন কমিটিতে কোনো আলেম না থাকায় বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করে এই কমিটি প্রত্যাখ্যান করেছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি- বিএসপি । আজ (২৩ সেপ্টেম্বর) সোমবার দপ্তর সম্পাদক মোঃ ইব্রাহিম মিয়া স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিএসপি চেয়ারম্যান শাহজাদা সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী বলেন, সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে জাতীয় পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে কোনো বিজ্ঞ আলেমের উপস্থিতি না দেখে আমরা বিস্মিত ও হতবাক হয়েছি। কারণ, ফ্যাসিস্ট হাসিনার শাসনামলে বিভিন্ন সময়ে জাতীয় পাঠ্যপুস্তকের অসঙ্গতি ও বিতর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে বিএসপিসহ ওলামায়ে কেরাম ব্যাপকভাবে সোচ্চার ছিলেন। অথচ আজ পাঠ্যপুস্তক সংশোধন কমিটি থেকে আলেমসমাজকে বঞ্চিত করে আবারও বিতর্কের জন্ম দেয়া হলো । আলেমবিহীন এই বৈষম্যমূলক কমিটি আমরা জোরালভাবে প্রত্যাখ্যান করছি। তিনি বলেন পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জন কমিটিতে আলিয়া মাদ্রাসায় পড়ালেখা করা একাধিক বিজ্ঞ আলমকে অন্তর্ভুক্তি করার জোর দাবি জানাচ্ছি। পাঠ্যপুস্তকে ইসলামবিদ্বেষী নবী অলির শান বিরোধী বিতর্কিত লেখা এখনো বিদ্যমান। পাঠ্যপুস্তক সংস্কার ও পরিমার্জন কমিটিতে বিজ্ঞ আলেমের অন্তর্ভুক্তি অপরিহার্য। তাই আলীয়ার বিজ্ঞ আলেমের সমন্বয়ে নতুনভাবে পাঠ্যপুস্তক সংস্কার কমিটি করতে হবে। পাঠ্যপুস্তক সংস্কার ও পরিমার্জন কমিটিতে অতিসত্বর একাধিক প্রসিদ্ধ বিজ্ঞ আলেমকে অন্তর্ভুক্ত করে শিক্ষা সংস্কার কমিটি পুনর্গঠন করার জন্য শিক্ষা উপদেষ্টার প্রতি জোর দাবি জানানাচ্ছে বিএসপি । সুপ্রিম পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, বৈষম্যমুক্ত একটি দেশের জন্যই আমরা সবাই লড়াই করেছি। সুতরাং, জনগণের আবেগ অনুভূতির ওপর কোনো ধরনের বৈষম্য ও বঞ্চনা চাপিয়ে দেয়ার সুযোগ নেই। এবং জনগণ তা মেনেও নেবে না। আমরা অন্তর্বর্তীকালিন সরকারকে সহযোগিতা করতে চাই। তাই বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার নামে আমরা কোন বৈষম্য দেখতে চাই না বলে তিনি উল্লেখ করেন।

আল্লাহর ওলি-আউলিয়াদের মাজার শরীফগুলো বাংলার ভাবচর্চার নিরাপদ আশ্রয়স্থল। এসব মাজার জ্ঞানচর্চার জীবন্ত একটি প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়া কখনো মানুষের ওপর জুলুম করে না জানিয়ে সম্প্রতি দেশে মাজারে মাজারে হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে বিএসপি চেয়ারম্যান বলেন, পাশ্চাত্যে আধ্যাত্মিক জ্ঞানতৃষ্ণা মেটাতে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা রয়েছে, যেটি আমাদের দেশে নেই। আমাদের দেশের মানুষের মনের তৃষ্ণা ও আধ্যাত্মিক জিজ্ঞাসার উত্তর দিয়ে গেছেন ওলি-আউলিয়া ও ফকিররা। তাঁদের প্রয়াণের পর তাঁদের মাজারগুলো মানুষের মনের তৃষ্ণা মেটানোর উত্তম ক্ষেত্র হয়ে ওঠে। সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ বলেন, মাজারে আগেও হামলা হয়েছে। কিন্তু এবার যেভাবে একটার পর একটা মাজারে হামলা হয়েছে, সেভাবে হয়নি। এটি নজিরবিহীন। বাংলায় ইসলামের বিস্তারে এ দেশের ওলি-আউলিয়াদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তাঁদের সমাধীই এ দেশের সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধার ‘মাজার’। এই মাজার দেশের গণসংস্কৃতি রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তিনি বলেন, আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে, দেশের স্বাধীনতা বিরোধী কিছু উগ্রবাদীগোষ্ঠী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের চারপাশে গেঁড়ে বসেছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে মাজার ভাঙার মতো ফৌজদারি অপরাধ করে দেশের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে। মাজারে হামলা, বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড ও জাতীয় পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জন কমিটিতে কোনো আলেম না থাকা পবিত্র ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন বিএসপি চেয়ারম্যান সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল হাসানী। অবিলম্বে ভাঙচুর ও লুটপাট করা সকল মাজার শরীফ বৌ ধর্মীয় উপাসনালয়ের পুনঃনির্মাণ করে দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

সম্প্রতি বিচারবহির্ভূত হচ্ছে হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়ে সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল হাসানী বলেন, ইসলাম সবসময়ই ন্যায়ের কথা বলে। মব জাস্টিস কখনো ইসলাম সমর্থন করে না। প্রিয় নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেদিন মক্কা বিজয় করলেন, সে দিন অনেকে চেয়েছিলো মব জাস্টিস করতে। কিন্তু মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকলকে শান্ত করলেন। কোন রক্ত ঝড়তে দেননি। বিচারের প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দোষীদের বিচার চাই আমরা। বিএসপি চেয়ারম্যান বলেন, ইসলামের নাম ব্যবহার করে উগ্রতা কখনো গ্রহণযোগ্য নয়। শান্তির ধর্ম ইসলাম সবসময়ই উদারতার পক্ষে। কোন বিষয়ে দ্বিমত থাকলে আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ সমাধান খুঁজতে হবে। সুফিরা এ উপমহাদেশে সম্প্রীতি, পরমতসহিষ্ণুতা ও মানবিক আদর্শ প্রতিষ্ঠা করেছে। অথচ আজ তাদেরকেই কোনঠাসা করতে চাচ্ছে উগ্রবাদীরা। সরকারের অবশ্যই আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করে জনগণের নিরাপত্তা দেয়া এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ।

Sponsor

Daily Darpan

Contact for Sponsor

You cannot copy content of this page